• ঢাকা
  • রবিবার , ৯ নভেম্বর ২০২৫ , রাত ০৩:৩০
ব্রেকিং নিউজ
হোম / আন্তর্জাতিক
রিপোর্টার : আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবে অস্পষ্ট স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র : কাতার

ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবে অস্পষ্ট স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র : কাতার

প্রিন্ট ভিউ

গাজা নিয়ে ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনায় স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিষয়টি অস্পষ্ট থাকায় আলোচনা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে কাতার/ ছবি: এআই দিয়ে তৈরে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা যুদ্ধ বন্ধে প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনায় স্পষ্ট করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, এই অস্পষ্টতা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা না থাকায় পরিকল্পনাটি ভেস্তে যেতে পারে। অন্যদিকে, হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্ততাকারী দেশ কাতার বলেছে, প্রস্তাবে বেশ কিছু ইস্যু স্পষ্ট না হওয়ায় আলোচনা প্রয়োজন। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউজে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। পরে সংবাদ সম্মেলনে গাজা যুদ্ধ বন্ধে তিনি ২০ দফা প্রস্তাব ঘোষণা করেন। তবে পরিকল্পনায় স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টি শর্তসাপেক্ষে ও অস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, কয়েকটি মিত্রদেশ ‘বোকার মতো’ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তার দাবি, গাজার উন্নয়ন ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কারের পরেই হয়তো এ বিষয়ে আলোচনা শুরু হতে পারে। নেতানিয়াহুও জানিয়েছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিষয়ে তিনি একমত নন এবং ট্রাম্পের প্রস্তাবেও এ ধরনের কিছু নেই।

প্রস্তাব অনুযায়ী, ইসরায়েল ও হামাস যদি প্রস্তাবে সম্মত হয়, তবে যুদ্ধ তাৎক্ষণিকভাবে থেমে যাবে। গাজায় আটক সব জিম্মিকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং ইসরায়েলে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে। নতুন ব্যবস্থায় গাজা পরিচালনা করবে একটি ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাট সরকার, যার তত্ত্বাবধানে থাকবে আন্তর্জাতিক শান্তি পর্ষদ। তবে এতে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না।

প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, গাজায় নিরাপত্তা রক্ষায় একটি আন্তর্জাতিক অস্থায়ী বাহিনী মোতায়েন করা হবে। কিন্তু এ বাহিনী কোথা থেকে আসবে, কারা যুক্ত হবে ও এর ক্ষমতা কতটা হবে, তা স্পষ্ট নয়। গাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি অন্তর্বর্তী বেসামরিক কমিটি গঠনের কথাও বলা হয়েছে। তবে কে এ কমিটি গঠন করবে, কীভাবে সদস্যরা নির্বাচিত হবে- এ বিষয়েও বিস্তারিত নেই।

ট্রাম্প হামাসকে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে প্রস্তাবের বিষয়ে মতামত জানাতে বলেছেন। না হলে হামাসকে ‘চরম পরিণতি’ ভোগ করতে হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন। তার ভাষ্য, সব আরব ও মুসলিম দেশ ইতিমধ্যেই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে, ইসরায়েলও সম্মতি জানিয়েছে; এখন শুধু হামাসের জবাব বাকি।

এদিকে গাজায় হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের শর্ত থাকায় পরিকল্পনাটি নিয়ে এই সংগঠনকে সন্দিহান বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। হামাস ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলেছে, প্রস্তাবটি একেবারেই ইসরায়েলপক্ষীয় এবং হামাসকে নির্মূল করার অসম্ভব শর্ত চাপিয়ে দিয়েছে। তবে আলোচনার সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা “সদিচ্ছা নিয়ে এটি পর্যালোচনা করবেন।

কাতারের অবস্থানও কিছুটা শর্তসাপেক্ষ। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানি আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য গাজায় যুদ্ধের অবসান; তবে প্রস্তাবে কিছু ইস্যু রয়েছে- এসবের ওপর আরও আলোচনা জরুরি। তিনি জানান, হামাসের হাতে পরিকল্পনার কপি দেওয়া হয়েছে এবং তারা এটি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে পর্যালোচনা করবে।

আল থানি আরও বলেন, সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে আগবাড়িয়ে আশাবাদী হওয়া ঠিক হবে না। তবে পরিকল্পনাটি সার্বিক হওয়ায় কাতার ইতিবাচকভাবে দেখছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও সব পক্ষকে ট্রাম্পের পরিকল্পনায় অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আমাদের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট ভোগান্তি লাঘব করা। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, পরিকল্পনার বাস্তবায়ন দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, নেতানিয়াহুর বিরোধিতা, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের শর্ত এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে অস্পষ্টতার কারণে ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন অনিশ্চিত রয়ে গেছে।

জাতীয়

আরও পড়ুন