ইনিংসের
পঞ্চম ওভারে ক্রিজে গিয়ে শেষ পর্যন্ত
টিকে রইলেন ডেওয়াল্ড ব্রেভিস। এই সময়ে ব্যাটকে
মুগুর বানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের তুলাধুনা করে উপহার দিলেন
রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি। তার
বিস্ফোরক ইনিংসের সৌজন্যে দুইশ ছাড়ানো সংগ্রহ
গড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় ধারেকাছেও যেতে পারল না
স্বাগতিকরা।
ডারউইনে
মঙ্গলবার সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ
আফ্রিকার জয় ৫৩ রানে।
ব্রেভিস-ঝড়ে ২১৮ রানের
পুঁজি গড়ে প্রতিপক্ষকে ১৬৫
রানে গুটিয়ে দিয়েছে তারা।
প্রথম
টি-টোয়েন্টিতে ১৭ রানে হেরেছিল
প্রোটিয়ারা। অস্ট্রেলিয়ার জয়রথ (টানা ৯ টি-টোয়েন্টি জয়) থামিয়ে তিন
ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতায়
ফেরাল তারা।
আন্তর্জাতিক
টি-টোয়েন্টিতে প্রথম সেঞ্চুরি ওরা ব্রেভিস খেলেন
১২৫ রানের ইনিংস। তার ৫৬ বলের
খুনে ইনিংসটি গড়া ৮ ছক্কা
ও ১২ চারে।
টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সিতে এটিই সবচেয়ে বড়
ব্যক্তিগত ইনিংস। ব্রেভিস ছাড়িয়ে যান ২০১৫ সালে
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১১৯ রান করা
ফাফ দু প্লেসিকে।
প্রোটিয়াদের
হয়ে এই সংস্করণে সর্বকনিষ্ঠ
ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরির রেকর্ডটিও এখন ব্রেভিসের। ২২
বছর ১০৫ দিন বয়সে
ম্যাচটি খেলতে নামেন তিনি। ২০১২ সালে জিল্যান্ডের
বিপক্ষে ২৪ বছর ৩৬
দিন বয়সে শতক করেছিলেন
রিচার্ড লেভি।
প্রথম
বলে জশ হেইজেলউডকে চার
মেরে ম্যাচ শুরু করেন এইডেন
মার্করাম। দুই বল পর
আরেকটি বাউন্ডারিতে ভালো শুরুর আভাস
দেন তিনি। অন্য প্রান্তে রায়ান
রিকেলটনও দ্রুত রান তোলায় দেন
মনোযোগ।
পরপর
দুই ওভারে রিকেলটন ও মার্করামকে বিদায়
করে অস্ট্রেলিয়াকে স্বস্তি এনে দেন বেন
ডোয়ার্শিস ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
১ রানে জীবন পেয়ে
পরের বলেই ম্যাক্সওয়েলকে বিশাল
ছক্কা হাঁকান লুয়ান-ড্রে প্রিটোরিয়াস।
যদিও
সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেননি
তিনি। ম্যাক্সওয়েলের পরের ওভারে উইকেট
ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায়
হন স্টাম্পড।
ডোয়ার্শিসকে
চার মেরে রানের খাতা
খোলেন ব্রেভিস। এরপর ছুটতে থাকেন
তিনি। আরেক প্রান্তে তাকে
সঙ্গ দিয়ে যান ট্রিস্টান
স্টাবস। তাদের জুটিতে আসতে থাকে দ্রুত
রান। যার কৃতিত্ব তরুণ
ব্রেভিসের।
দ্বাদশ
ওভারে ম্যাক্সওয়েলের ওপর ছয় বইয়ে
দেন ব্রেভিস। টানা চার বলে
তিনটি ছক্কা ও একটি চার
মারেন তিনি। প্রথম ছক্কায় ২৫ বলে স্পর্শ
করেন ফিফটি।
পরের
ওভারেই জশ হেইজেলউডকে দুটি
চার ও একটি ছক্কায়
আশির ঘরে পৌঁছে যান
ব্রেভিস। পঞ্চদশ ওভারে কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরির উষ্ণ ছোঁয়া পান
তিনি, ৪১ বলে। দক্ষিণ
আফ্রিকার হয়ে যা দ্বিতীয়
দ্রুততম। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের
বিপক্ষে ৩৫ বলে ডেভিড
মিলারের করা সেঞ্চুরিটি রেকর্ড।
এক ওভার পর স্টাবসের
বিদায়ে ভাঙে ৫৭ বল
স্থায়ী ১২৬ রানের জুটি।
যেখানে স্টাবসের অবদান ২২ বলে ৩১।
শেষ
পর্যন্ত ক্রিজে থেকে দলের রান
দুইশ পার করেন ব্রেভিস।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এনিয়ে
তৃতীয়বার দুইশ করল দক্ষিণ
আফ্রিকা।
টি-টোয়েন্টিতে দারুণ ছন্দে থাকা অস্ট্রেলিয়া এদিন
লড়াই-ই করতে পারেনি।
রান তাড়ায় নেমে নিয়মিত বিরতিতে
উইকেট হারায় তারা। দলটির ইনিংসে পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি নেই একটিও।
দ্বিতীয়
ওভারে মার্করামের বলে ক্যাচ দিয়ে
বিদায় নেন ট্রাভিস হেড।
কিউনা মাফাকাকে টানা দুটি চার
মেরে ঝড়ের আভাস দেওয়া
ক্যামেরন গ্রিন পরের বলে ধরা
পড়েন মিডউইকেটে।
মাফাকার
ওই ওভারের শেষ তিন বলে
তিনটি চার হাঁকিয়ে তাণ্ডব
শুরু করেন টিম ডেভিড।
সপ্তম ওভারে পিটারকে দুটি ছক্কায় ওড়ান
ছন্দে থাকা ব্যাটসম্যান।
মিচেল
মার্শকে ফিরিয়ে জমে ওঠা ৪৮
রানের জুটি ভাঙেন কর্বিন
বশ। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ২৩ বলে ফিফটিতে
পা রাখেন ডেভিড। পরের বলে তাকে
ফিরিয়ে দেন কাগিসো রাবাদা।
চারটি করে ছক্কা-চারে
ঠিক ৫০ রান করেন
ডেভিড।
গ্লেন
ম্যাক্সওয়েল, মিচেল ওয়েন পারেননি দলের
হাল ধরতে। জশ ইংলিস অসুস্থ
থাকায় চার বছর পর
টি-টোয়েন্টিতে খেলতে নেমে ১৮ বলে
২৬ রান করেন অ্যালেক্স
কেয়ারি।
১৪ রানে শেষ ৪
ব্যাটসম্যানের বিদায়ে বেশিদূর যেতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া।
আগামী
শনিবার তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত
স্কোর:
দক্ষিণ
আফ্রিকা: ২০ ওভারে ২১৮/৭ (মার্করাম ১৮,
রিকেলটন ১৪, প্রিটোরিয়াস ১০,
ব্রেভিস ১২৫*, স্টাবস ৩১, ফন ডার
ডাসেন ৫, বশ ০,
রাবাদা ৫; হেইজেলউড ৪-০-৫৬-১,
ম্যাক্সওয়েল ৪-০-৪৪-২, ডোয়ার্শিস ৪-০-২৪-২,
অ্যাবট ৪-০-৪৪-০, জ্যাম্পা ৪-০-৪৬-১)
অস্ট্রেলিয়া:
১৭.৪ ওভারে ১৬৫
(মার্শ ২২, হেড ৫,
গ্রিন ৯, ডেভিড ৫০,
ম্যাক্সওয়েল ১৬, ওয়েন ৮,
কেয়ারি ২৬, ডোয়ার্শিদ ১২,
অ্যাবট ১, জ্যাম্পা ০,
হেইজেলউড ০*; রাবাদা ৩-০-২১-১,
মার্করাম ১-০-৯-১, এনগিডি ৩.৪-০-১৯-১, মাফাকা ৪-০-৫৭-৩,
পিটার ৩-০-৩৫-১, বশ ৩-০-২০-৩)
ফল:
দক্ষিণ আফ্রিকা ৫৩ রান জয়ী
ম্যান
অব দা ম্যাচ: ডেওয়াল্ড
ব্রেভিস
সিরিজ:
৩ ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায়